এখন কম বেশি সবাই আমরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকি। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো এখন কম বেশি সবাই বাড়িতে এক থেকে  দুইটি মোবাইল ফোন রয়েছে।আর সবার ওই বাড়িতে ছোট ছেলে মেয়ে রয়েছে তারা কিন্তু সব সময় বাড়িতেই থাকে।তারা বাড়িতে যে মোবাইল ফোন টি থাকে সেটা চালার জন্য তারা অনেক বেশি আগ্রহ হয়।যেমন ধরুন,

মাএ চার বছর বয়সী ছেলে জিহাদ সে তার মায়ের মোবাইলেই সে প্রতিদিন গেম খেলে যাচ্ছে।আর তার হাতে থেকে যখনই তার মা তার কাছ থেকে ফোনটি কেড়ে নেয় ঠিক তখনই সে কান্না শুরু করে দিতো।এমন কি সে খাবার সময় ও সে মোবাইল ফোন চায় তার মায়ের কাছে কারণ সে মোবাইল এর প্রতি আসক্ত হয়ে পরে গেছে।জিহাদের মোবাইল ফোনের প্রতি এতোটা আসক্ত হওয়ার কারণে তার বাবা মা অনেক দুশ্চিন্তায় পরে গেছে।

এই চিত্র শুধু মাএ জিহাদের পরিবারে এক কার নয় সারা বাংলাদেশের।তবে এখন কম বেশি  সবাই তাদের সন্তানদের মোবাইল ফোনের আসক্তি দেখে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেন।আর ডিজিটাল এই যুগে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না এমন কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ খুঁজে পাওয়া অনেকটা দায় রয়েছে।

কিন্তু বাচ্চারা যখন মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ে তখন অশুভ ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়।আর ইউনিসেফের গবেষণা বলছে, যে বাংলাদেশে শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করার সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।তবে প্রায় ৫০ ভাগ শিশু ল্যাপটপ ব্যবহার করে।আর স্কুলে ও ডেস্কটপ ব্যবহারের সংখ্যা আরও অনেক বেশি।

তবে শিশুরা কেন ফোন ও ট্যাব কিংবা ল্যাপটপে প্রতি এতো বেশি আকৃষ্ট হওয়ার কারণ কী?

প্রথমতো,কারণ হলো শহরের অধিকাংশ পরিবারে মা-বাবা দু’জনই চাকরিজীবী।আর অফিস শেষে তারা তাদের সন্তানদের পর্যাপ্ত সময় দিতে পারেন না।যার ফলে শিশুরা মা-বাবার আদর-যত্ন থেকে অনেকাংশে বঞ্চিত হয়।তাই তারা বাচ্চাদের অবসর সময় কাটানোর জন্য ফোন, ট্যাব কিংবা ল্যাপটপ কিনে দিচ্ছেন।যার ফলে শিশুরা খুব সহজেই এসবে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে।

দ্বিতীয়তো ,এক সময় শিশুদের খেলাধুলা করার জন্য পর্যাপ্ত মাঠ ছিলো এবং সকল বাচ্চারা বাইরে খোলা মাঠে সব সময় খেলাধুলা করতো।বর্তমান যেমন খেলার মাঠ নেই তেমনি বাচ্চারা খেলাধুলা করার তেমন একটা জায়গায় ও পায় না।তাই এখন কার শিশুরা ঘরের বাইরে খেলতে যেতে পারে না, কিন্তু এখন কার শিশুদের খেলতে যাওয়ার আগে তাদের অভিভাবকরা তাদের সন্তানের নিরাপত্তার বিষয়টিও ভাবেন।আর সে জন্যই অনেক অভিভাবকই তার ঘরে শিশুদের কার্টুন ও গেমস দেখে সময় কাটানোকে তারা ভালো মনে করেন।

তৃতীয়তো, মনে করেন আপনি যে কোনো কাজে ব্যস্ত ঠিক সেই সময় আপনার পাশে বসে থাকা শিশুটি অনেক দুষ্টমি করছে।আর আপনি তার দুষ্টুমি থামার জন্য তাকে আপনার মোবাইল ফোন বা ট্যাব টি তার হাতে তুলে দিলেন,এবং আপনি তাতে ভিডিও গান বা মজার মজার কার্টুন ছেড়ে দিলেন এবং শিশু টিকে আপনি নিমিসেই থামিয়ে দিলেন।এর পর আপনি আপনার কাজ খুব সহজেই করলে আর এভাবেই শিশুরা মোবাইল ফোনের প্রতি আসক্ত হয়ে পরে।তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন,যে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে বাধাগ্রস্ত হয় শিশুদের মন মানসিক বিকাশ।আর মোবাইল ফোনের বিকরণ থেকে চোখের নানা ধরনের  রোগে আক্রান্ত হয় শিশুরা।মোবাইল ফোন অথবা ইন্টারনেট আসক্তি শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে বাধা দেয়।

তবে এতে শিশুর ধৈর্য ও মনোযোগ অনেক তাই কমিয়ে দেয়।যায় ফলে শিশুরা আস্তে আস্তে  অসহিষ্ণু, অসামাজিক ও উচ্ছৃঙ্খল হয়ে পড়ে।আর অনেক সময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে শিশুরা পর্যাপ্ত ঘুম থেকে ও বঞ্চিত হয়।এর কারণ দেখা যায় যে অনেক শিশুরা অনেক রাত জেগে তারা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকে আর তার কারণে তাদের ঘুমের ও ঠিক মতো হয় না।এতে তারা মনোযোগ ও ঘাটতি জনিত চঞ্চলতা বা অ্যাটেনশন এবং  ডেফিসিট হাইপার আ্যক্টিভিটি ডিসর্ডার’ নামক জটিলতায় ভোগে।আর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শিশুরা অপ্রাপ্ত বয়সেই না বুঝে বিভিন্ন অনৈতিক ও আপত্তিকর বিষয়বস্তুর সম্মুখীন হয়।আর এতে তারা সহজেই এ বিষয় গুলোর মুখোমুখি হওয়া তারা এ গুলোকে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করছে।আর এই ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে হলে সবার আগে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।

তার মূল কারণ হলো সন্তানকে যদি সে অধিক সময় দেয় এবং পারিবারিক ও সামাজিক সংযোগে বাড়লে শিশুদের ইলেকট্রনিক মাধ্যমে আসক্তি অনেকটা কমে যাবে।তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো যে উপযুক্ত বয়স না হওয়া পর্যন্ত যে কোনো শিশুর হাতে আপনারা মোবাইল ফোন তুলে দিবেন না।আর অভিভাবকদের  নির্ধারণ করতে হবে তার সন্তানের হাতে ফোন দেয়ার উপযুক্ত সময় কখন, আর ঘরের বাইরে শিশুদের খেলাধুলা নিশ্চিত করতে পারলে তারা মোবাইল ফোনের  আসক্ত হওয়ার সমস্যা অনেকটা কমে যাবে।