বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নাও মৃত্যর কোনো সময় অসময় বলে কিছুই নেই।

মৃত্যু সম্পর্কে আজকের একটি চমৎকার কথা দিয়ে লেখাটি শুরু করলাম মানুষ পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্য নানান রকম কাজ করে থাকেন।আর মানুষ শত্রু কাজ থেকে বাচার জন্য নানানরকম পথ অবলম্বন করে থাকে। আবার নানাভাবে তারা টাকা নষ্ট করে এবং উন্নত মানের দালান তৈরি করেন।পৃথিবীতে যখন একজন মানুষ যখন জন্ম গ্রহন করেন ঠিক তখনই তার মৃত্যুর খাতায় তার নাম লেখা হয়।আর মৃত্যু হলো কঠিন যন্ত্রণা আর এই যন্ত্রণা থেকে বাচার জন্য মানুষ কে আমল করতে হবে। মানুষ মাত্রই মরনশীল। জীবন চলাকালীন সময়ে কোন এক মুহূর্তে মৃত্যু অবধারিত। তার পরও আমরা এই ব্যাপারে উদাসীন।যার ফলশ্রুতিতে আমাদের ভুগতে হবে মৃত্যুর পরবর্তী সময়ে। মৃত্যুর প্রতি এই গুরুত্বহীনতার ফলাফল উপলব্ধি করার জন্য চরম দৃষ্টান্ত হিসেবে এক অহংকারি বাদশার জীবন কাহিনী সম্পর্কে কিছু বিষয় লিখলাম।

হযরত ওয়াহাব ইবনে মুনাব্বেহ (রঃ) বলেন,একদিন এক বাদশাহ সহ ঘোড়ার উপর আরোহন করে সফরে যেতে চাইলেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি পোশাক চাইলেন।তার কথা মতো পোশাক আনা হল। কিন্তু সে পোশাক তিনি পছন্দ করলেন না। পরে তিনি নিজের পছন্দ মতো পোষাক পছন্দ পরিধান করলেন। এরপর অনেকগুলো ঘোড়া তার সামনে উপস্থিত হাজির করা হলো,কিন্তু একটি ঘোড়াও তার পছন্দ হলো না। শেষ পর্যন্ত সেই রাজা রাজ্যের সর্বোৎকৃষ্ট ঘোড়াটি পছন্দ করে তাতে আরোহন করলেন। এরপর সুসজ্জিত সৈন্য বাহিনী নিয়ে ভ্রমনের উদ্দেশ্যে বের হয়ে গেলেন। তার এত অহংকার ছিল যে কেউ তার নিকটে আসতে সক্ষম হয়না।গর্ব-অহমিকা আর এতো নিকট ছিল যে, কারো দিকে দৃষ্টিপাত ও পর্যন্ত করেন না।

আর এমন সময় মালাকুল মাউত মলিন পোশাক পরিধান করে তার স্যামনে ফকির বেশে বাদশাহর কাছে আসে আর তার সামনে এসে তাকে সালাম দিলেন। আর তিনি তার সালামের জবাব দিলো না।আর একজন ফকিরের সালামের জবাব দিবে সে ? এতো ক্ষমতাধর বাদশাহ হয়ে সে একজন সামান্য ফকির এর সালামের জবাব দেয়াটা ও তিনি খুবই ঘৃণ্য কাজ বলে মনে করন বাদশাহ।আর যখন মালাকুল মাউত ও আযরাঈল (আ.) তার কাছে আসবে তখন তিনি রাগান্বিত হয়ে ঘোড়ার লাগাম ধরে ফেললেন।আর এটা দেখে বাদশাহ পেয়াদাকে বললেন, যে ফকিরকে দূরে সরিয়ে দাও।আর তখন আযরাঈল (আ.) বললেন, মহারাজ আপনার নিকট আমার কিছু কথা আছে।আর তখন বাদশাহ বললেন যে থাম আমি ঘোড়া হতে নেমে নেই।আর আযরাঈল (আ.) বললেন, না আমি এখনই বলবো।আর তখন বাদশাহ বললেন তবে বল।

তখন আযরাঈল (আ). বাদশাহর কানে কানে বললেন, আমি যমদূত, এ মুহূর্তেই আমি তোমার জান কবজ করার জন্য এসেছি। এই কথা শুনামাত্র বাদশাহর চেহারা মলিন হয়ে গেল আর মুখে কোনো কথা বলার মতো শক্তি তার রইল না।আর অনেক কষ্টে বাদশাহ কে বলতে লাগলেন যে ঘরে গিয়ে স্ত্রী-পুত্রদের নিকট হতে বিদায় নেয়ার জন্য কিছুটা সময় দিন।আযরাঈল আ. বললেন, না!তিনি বলেন যে তোমাকে এক মুহূর্ত এর জন্য ও সময় দেয়া হবে না তোমাকে এবং সাথে সাথে বাদশাহর প্রাণ হরণ করে নিলো।এমনি ভাবে পৃথিবীর কেউই মৃত্যু থেকে রেহাই পায়নি। মৃত্যুর যন্ত্রনা এমন কঠিন যন্ত্রনা যা মৃত্যু মুহূর্তেই উপলব্ধি করা যায়। স্বয়ং নবী কারীম (সা.) মৃত্যুর যন্ত্রনা ও কষ্টের কথা উল্লেখ করে বলেন- তলোয়ার দ্বারা তিনশত আঘাত করলে যে যন্ত্রনা হয়, ঠিক মৃত্যুর সময় সেই যন্ত্রনা অনুভূত হবে।

হাদীস শরীফে আছে, মূসা (আঃ) এর মৃত্যুর সময় মহান আল্লাহ তায়ালা মূসা (আঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন, মৃত্যুর যন্ত্রনা কেমন অনুভব করছো? মূসা (আঃ) উত্তরে বলেন, জীবন্ত একটি পাখিকে গরম তেলে ভাজার মত। যেমন সে উড়েও যেতে পারেনা বা মরেও যন্ত্রনা হতে মুক্তি লাভ করতে পারবেনা। হযরত কাবুল আহবার (রাঃ) হযরত ওমর (রাঃ) কে মৃত্যুর যন্ত্রনার অবস্থা জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তর দিলেন- কাঁটা যুক্ত একটি ডালা পেটের ভিতর ঢুকিয়ে দিয়ে তা এক একটি রগে বিঁধে গেলে সেটি টেনে বের করতে যেরুপ কষ্ট হয় মৃত্যুর যন্ত্রনাও তদ্রুপ। এখন প্রশ্নের বিষয় হল, এই যন্ত্রণাময় মৃত্যুর জন্য আমরা কতটুকু প্রস্তুতি গ্রহন করেছি। পরিশেষে দয়াময় প্রভূর নিকট আরজি নিবেদন করছি যে, তিনি যেন আমাদেরকে মৃত্যুর মতো কঠিন যন্ত্রনা থেকে হেফাজত করেন।আমিন মহান আল্লাহ তাআলা পবিএ কুরআনুল কারিমের মাধ্যমে মানুষকে তিনি আগেই সতর্ক করে দেন।আরযে মৃত্যুর পূর্বে ইসলামী এর নীতিমালা সম্পন্ন মেনে ও পূর্ণাঙ্গ মুসলমান হয়ে যাও।আর তবেই তোমরা মৃত্যুকালীন কষ্টসহ পরকালের প্রথম ধাপ হল ও কবর, এবং ফুলসিরাত,ও হাশরের ময়দানে আল্লাহর বিচারের দিন নাজাত লাভ করবে।

তো বন্ধুরা আপনারা সবাই ইসলামি কথা শেয়ার করে আপনিও ইসলাম প্রচারে অংশগ্রহণ করবেন।